কুষ্টিয়া বার্তাখেলার বার্তা
কুষ্টিয়ায় মুজিব শতবর্ষ জেলা দাবা লিগ ২০২১ এর সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টায় কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্স ব্যাডমিন্টন গ্রাউন্ডে মুজিব শতবর্ষ জেলা দাবা লিগ ২০২১ এর সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ সুপার কুষ্টিয়া মোঃ খাইরুল আলম প্রধান অতিথি হিসেবে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সভাপতি হিসেবে উক্ত সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে জেলা পুলিশ কুষ্টিয়ার আয়োজনে ২৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্সের ইনডোর ব্যাডমিন্টন গ্রাউন্ডে মুজিব শতবর্ষ জেলা দাবালীগ ২০২১ এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার কুষ্টিয়া এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া পুনাক সভানেত্রী জনাব দিলরুবা আলম।
মুজিব শতবর্ষ জেলা দাবা লিগ ২০২১ এ সর্বমোট ১৪টি দলের ৭০ জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেন। কুষ্টিয়া জেলার এই দল গুলি যথাক্রমে ১. মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র ২. মর্নিং গ্লোরি চেস ক্লাব এ ৩. মর্নিং গ্লোরি চেস ক্লাব বি ৪. কুষ্টিয়া ক্রিসেন্ট ক্লাব ৫. কুষ্টিয়া যুব স্পোর্টিং ক্লাব ৬. ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব ৭. আমলাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব ৮. আড়ুয়াপাড়া তরুণ সংঘ পাঠা: ও ক্লাব ৯. সানআপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ ১০. আবাহনী ক্রীড়াচক্র ১১. কুষ্টিয়া চেস ক্লাব ১২. শেখ কামাল ক্রীড়া চক্র ১৩. দেবী প্রসাদ এ সি ১৪. জুপিটার স্পোর্টিং ক্লাব অংশগ্রহণ করে। তুমুল প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই টুর্ণামেন্টে আড়ুয়াপাড়া তরুণ সংঘ পাঠা: ও ক্লাব চ্যাম্পিয়ন এবং মর্নিং গ্লোরি চেস ক্লাব এ রানারআপ হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার কুষ্টিয়া মোঃ খাইরুল আলম বলেন, দাবা একটি প্রাচীন ও জনপ্রিয় খেলা। ১৩০০ বছর আগে অর্থাৎ ষষ্ঠ শতাব্দীতে চীন, ইন্ডিয়া অথবা পার্সিয়ায় প্রথম দাবা খেলার উদ্ভব হয়েছিল। এই দাবা খেলা ভারতবর্ষে একটি জনপ্রিয় খেলা হলেও বর্তমানে রাশিয়া, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দেশসমূহে এই দাবা খেলায় খুব ভালো করছে। তিনি আরো বলেন দাবা একটি বুদ্ধিবৃত্তিক খেলা, দাবা খেলার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্কের ব্যায়াম হয়; যা আমাদের চিন্তা করে কাজ করার ক্ষমতা ও দক্ষতা প্রদান করে। এই দাবা খেলা ছোটদের মানসিক বিকাশ সাধন করে ; তাদের কাজে মনোযোগ বাড়িয়ে দিয়ে থাকে ; এমনকি বিভিন্ন জটিল সমস্যার সমাধানও কিন্তু এই দাবা খেলার মাধ্যমে আমরা আয়ত্ত করে থাকি।
দাবা খেলা মূলত গুটি চাল দিয়ে বিপক্ষ রাজাকে কোণঠাসা করে এমন স্থানে যেতে বাধ্য করা, যেখান থেকে রাজার আর কোন চাল থাকেনা, দাবার পরিভাষায় একে কিস্তিমাত বলা হয়। বিশ্ব দাবা সংস্থা ফিদে নামে পরিচিত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতীয় দাবা ফেডারেশন কে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ফিদে (FIDE) নামক এই আন্তর্জাতিক সংগঠন। এটি একটি ফরাসি শব্দ যার পূর্ণ অর্থ হলো “ফেডেরাসিওঁ ইন্তারনেসিওনাল দে ইশেক”।
সুইজারল্যান্ডের লো-জান (Lausanne) শহরে ফিদে (FIDE) এর সদর দপ্তর অবস্থিত। দাবা খেলায় পারদর্শীতার সর্বোচ্চ স্বীকৃত পর্যায় বা লেভেল হচ্ছে গ্রান্ড মাস্টার। ফিদে যাকে গ্র্যান্ডমাস্টার বলে স্বীকৃতি দেয় তিনি গ্র্যান্ডমাস্টার। বাংলাদেশে দাবা খেলায় গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ, রানী হামিদ, রিফাত বিন সাত্তার, ভারতের বিশ্বনাথন আনন্দ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ববি ফিশার, ইংল্যান্ডের নাইজেল শর্ট, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের গ্যারি কাসপারভ ও কারপভ।
পুলিশ সুপার কুষ্টিয়া মোঃ খাইরুল আলম আরো বলেন বাংলাদেশে দাবা খেলা প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি ও সাউথ এশিয়ান চেস কাউন্সিলের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বর্তমানে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় নিয়মিতভাবে দাবা টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এই কারণে আমরা আশা করতে পারি যে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে আরো অনেক গ্র্যান্ডমাস্টার তৈরি হবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মোঃ ফরহাদ হোসেন খাঁন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (জেলা বিশেষ শাখা), মোঃ আতিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), মোঃ রাজিবুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর), এডভোকেট মোসাদ্দেক আলী মনি, অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক, জেলা ক্রীড়া সংস্থা কুষ্টিয়া, লিয়াকত আলী খাঁন, সভাপতি দাবা উপপর্ষদ ও ট্রেজারার জেলা ক্রীড়া সংস্থা কুষ্টিয়া, ডাঃ রতন কুমার পাল, সম্পাদক, দাবা উপপর্ষদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থা কুষ্টিয়া ও সভাপতি মর্নিং গ্লোরি, মোঃ আবু জাফর মোল্ল্যা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক, কুষ্টিয়া, ১৪ টি ক্লাবের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাবৃন্দ, আরবিটরবৃন্দ এবং ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।