৩০০ গ্রাহকের সাড়ে ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ছানাউল্যাহ
ভুয়া রিয়েল এস্টেট কোম্পানি খুলে অধিক লোভ দেখিয়ে ৩০০ গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের মো. ছানাউল্যাহ (৪১)। গতকাল রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করেছেন র্যাব- ১১ এর সদস্যরা। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত মো. ছানাউল্যাহ বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের একলাশপুর গ্রামের মোশারফ হোসাইনের ছেলে।
র্যাব-১১ সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় থেকে কয়েকজন প্রতারকের সহায়তায় নোয়াখালীর চৌমুহনী পৌরসভার সমবায় সুপার মার্কেটে ‘নোয়াখালী ডেভেলপমেন্ট এন্ড রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি অফিস খোলেন মো. ছানাউল্যাহ। পরবর্তীতে সহজ-সরল প্রকৃতির লোকজনকে টার্গেট করে উক্ত কোম্পানির অংশীদার হলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ ও ধনসম্পদ আত্মসাতের প্রক্রিয়া শুরু করেন। উক্ত ভুয়া কোম্পানিতে অতিরিক্ত লাভের আশায় অনেকেই বিনিয়োগ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে বিনিয়োগকারীরা কোনো প্রকার আর্থিক লভ্যাংশ না পেয়ে টাকা ফেরত চাইলে তিনি তাদেরকে হুমকি-ধমকিসহ খুন ও গুমের ভয়ভীতি দেখানে থাকেন। একপর্যায়ে মো. ছানাউল্যাহ চৌমুহনী পৌরসভার সমবায় সুপার মার্কেটের অফিসটি বন্ধ করে দেন এবং আত্মগোপনে চলে যান।
প্রতারণার স্বীকার বেগমগঞ্জ উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের কিছমত করিমপুর গ্রামের মৃত আবদুল জলিলের ছেলে বেলাল হোসেন (৪৭) ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতারক ছানাউল্যাহের বিরুদ্ধে আমি জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করি। তারপর র্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ এর কাছে অভিযোগ জমা দেই।
র্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল রাতে বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে ছানাউল্যাহকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা ছায়া তদন্তে জানতে পারি ছানাউল্যাহ একজন জনসাধারণের অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎকারী ও প্রতারক শ্রেণির লোক। তিনি সাদা কাগজ, স্ট্যাম্প ও রিসিভ কপি প্রদানের মাধ্যমে প্রায় ৩০০ সহজ-সরল ও নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে প্রায় ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। পরবর্তীতে এসব অর্থ আত্মসাতের উদ্দ্যেশ্যে উক্ত ভুয়া কোম্পানির অফিস কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান।