ছেলে কোলে ই-রিকসা চালিয়ে রোজগার, ২৭-এর সিঙ্গল মাদারের গল্পে চোখে জল আসবে
জীবনে যখন প্রতিকূলতা ছাড়া আর কিছুই নয়, তখন প্রতি পদক্ষেপে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করাই একমাত্র সম্বল। তেমনটাই ঘটেছে ২৭ বছরের চঞ্চল শর্মার জীবনে। সিঙ্গল মাদার। নয়ডার রাস্তাঘাটে বিশেষ নজর কেড়েছেন তিনি।
ই-রিকসা চালিয়ে সংসার টানেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, সঙ্গে থাকে তাঁর একরত্তি সন্তানও। এক বছরের শিশুকে তাঁর শরীরে বেঁধে ই-রিকশা চালিয়ে যাত্রীদের নিয়ে যান তিনি।
স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে৷ তাঁর যে আর কেউ নেই। কারও কাছে সন্তানকে রেখে যাওয়ার উপায় নেই৷
অগত্যা এক বছরের একরত্তিকে নিয়েই রোজগারে বেরোতে হয় তাঁকে। চঞ্চল যেখানে, তাঁর সন্তানও সেখানেই। ছোট্ট ছেলের জন্য ডে কেয়ার বা আয়ার ব্যবস্থা কথার মতো সামর্থ্য চঞ্চলের নেই। চঞ্চল তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকেন বটে, কিন্তু চঞ্চল যখন রিকসা চালাতে বেরোন, সেই সময়ে তাঁর মা-ও সবজি বিক্রি করতে বসেন বাজারে। তা ছাড়া বোন থাকেন খানিক দূরে। খুব প্রয়োজনে কোনও অনুষ্ঠানে যেতে হলে তবেই বোনের সাহায্য নেন তিনি।
ছেলের জন্মের পর গত বছর চাকরি খুঁজতে শুরু করেছিলেন চঞ্চল। তার পরেই ই-রিকসা চালানো শুরু।
তিনি প্রতিদিন ৬০০-৭০০ টাকা উপার্জন করেন। যার প্রায় অর্ধেকই ই-রিকশা কেনার জন্য নেওয়া ঋণ মেটাতে চলে যায়। কিন্তু নিজের সন্তানকে ভাল শিক্ষা দিতে তিনি বদ্ধপরিকর। তার জন্য যথাসম্ভব পরিশ্রম করেন তিনি।
তিনি নয়ডার প্রবল দাবদাহের সময়েও ছেলে কোলে রিকসা চালিয়েছেন। চঞ্চল সে প্রসঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, “তখনও ছেলেকে নিয়ে রাস্তায় বেরোতে হয়েছিল। উপায় ছিল না। আমি গাড়ি চালাতাম আর ছেলে আমার কেঁদেই যেত সারাক্ষণ।” চঞ্চলের কথায় জানা যায়, যাত্রীরা তাঁর এই পরিশ্রম দেখে খুবই প্রশংসা করেন। তা ছাড়া মহিলা যাত্রীরা তাঁর গাড়িতে উঠতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন।