লাইফস্টাইল
হিট স্ট্রোক: জীবন-হুমকির কারণ, সচেতনতা ও প্রতিরোধ
মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৯৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট। কোনো কারণে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে রক্তনালি প্রসারিত করে অতিরিক্ত তাপ পরিবেশে ছড়িয়ে দেয় শরীর। ঘামের মাধ্যমেও তাপ কমায় শরীর। তবে প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্র পরিবেশে বেশি সময় অবস্থান বা পরিশ্রমের কারণে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে হতে পারে হিট স্ট্রোক। শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণক্ষমতাও তখন নষ্ট হয়ে যায়।
প্রতিরোধের উপায়
- তরল পান করুন: প্রচুর পরিমাণে পানি, ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় (যেমন, স্পোর্টস ড্রিঙ্ক) পান করুন। গরমে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে লবণ ও খনিজ পদার্থ বেরিয়ে যায়, তাই তা পূরণ করা জরুরি।
- ঠান্ডা থাকুন: ঠান্ডা স্থানে থাকুন, এয়ার কন্ডিশন বা প্যানখা ব্যবহার করুন। ঠান্ডা পানিতে গোসল করুন বা ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছুন।
- হালকা পোশাক পরুন: ঢিলেঢালা, হালকা রঙের সুতির পোশাক পরুন। গাঢ় রঙের পোশাক তাপ শোষণ করে।
- সূর্যের আলো এড়িয়ে চলুন: দিনের সবচেয়ে গরম সময় (সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা) বাইরে বের হওয়া এড়িয়ে চলুন। যদি বাইরে যেতে হয়, তাহলে টুপি, রোদ চশমা ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
- শারীরিক পরিশ্রম কমিয়ে দিন: গরমের সময় জোরালো কাজ বা ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন।
- বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন: শিশু, বৃদ্ধ, গর্भवती নারী, স্থূলকায়ী, এবং কিছু রোগ যেমন ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে। তাদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
হলে কী করবেন:
- তৎক্ষণ ঠান্ডা করুন: আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঠান্ডা স্থানে নিয়ে যান। এয়ার কন্ডিশন বা প্যানখা ব্যবহার করুন। ঠান্ডা পানিতে গোসল করুন বা ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছুন।
- তরল পান করুন: যতটা সম্ভব পানি বা ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় পান করুন।
- চিকিৎসা সহায়তা নিন: দ্রুততম সময়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ:
- শরীরের তাপমাত্রা ১০৪°F (৪০°C) এর বেশি
- প্রচণ্ড মাথাব্যথা
- মাথা ঘোরা
- বমি বমি ভাব
- বমি
- দ্রুত ও দুর্বল পালস
- শুষ্ক ত্বক
- চামড়া লাল বা নীল হয়ে যাওয়া
- বিভ্রান্তি
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
মনে রাখবেন: হিট স্ট্রোক একটি জরুরী অবস্থা। দ্রুত চিকিৎসা না করলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। তাই সতর্ক থাকুন এবং প্রয়োজনে দ্রুত ব্যবস্থা নিন।