অপরাধ

‘সানিকে ধাক্কা মেরে নদীতে ফেলে হত্যা করে বন্ধুরা’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী তারিকুজ্জামান সানিকে তার বন্ধুরা পরস্পর যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে কৌশলে ঘটনাস্থল মৈনটঘাটের পল্টুনে (জেটিতে) এনে ধাক্কা মেরে পদ্মা নদীতে ফেলে হত্যা করেছে’।

 

শনিবার (১৬ জুলাই) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুতুবপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এসআই (নি:) শামছুল আলম ভিকটিম সানির ১৫ বন্ধুকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রিমান্ড আবেদনে একথা বলেন তদন্ত কর্মকর্তা।

 

আসামিরা হলেন- সানির বন্ধু শরীফুল হোসেন, শাকিল আহম্মেদ, সেজান আহম্মেদ, রুবেল, সজীব, নুরজামান, নাসির, মারুফ, আশরাফুল আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন, নোমান, জাহিদ, এটিএম শাহরিয়ার মোমিন, মারুফুল হক মারুফ ও রোকনুজ্জামান ওরফে জিতু।

 

এদিকে রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বুয়েট শিক্ষার্থী সানিকে পদ্মা নদীকে ফেলে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডটি একটি দুর্ঘটনা হিসেবে দেখানোর জন্য তারা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে। পরবর্তীতে দোহার থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ডুবুরী দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সানিকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। হত্যাকাণ্ডের মোটিভ ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে ও তারা নিজেদের এর সাথে জড়িত থাকার বিষয় আড়াল করতে থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ডুবুরী দলকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতে থাকে ।

 

প্রাথমিক তদন্তে সাক্ষ্য প্রমাণে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে সানিকে কৌশলে ঘটনাস্থল মৈনটঘাটের পল্টুনে (জেটিতে) এনে ধাক্কা মেরে পদ্মা নদীতে ফেলে হত্যা করেছে মর্মে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

 

মামলার মূল রহস্য উদঘাটন, ঘটনার সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা; হত্যার উদ্দেশ্য, মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

 

ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আশরাফুজ্জামানের আদালতে কিছুক্ষণের মধ্যে রিমান্ড শুনানি হবে।

 

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা জেলার দোহার থানাধীন মৈনট ঘাটে ১৫ বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী তারিকুজ্জামান সানি। বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের পঞ্চম সেশনের ছাত্র সানির বাবার নাম হারুন অর রশিদ। বাড়ি রাজধানীর হাজারীবাগে।

 

নিখোঁজ হওয়ার পর সানির সন্ধানে নামে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে ডুবুরি দল। ওইদিন রাতে রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে শুক্রবার বেলা ১১টা ২৬ মিনিটে মৈনট ঘাট থেকে ওই বুয়েট শিক্ষার্থী মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় শুক্রবার (১৫ জুলাই) বিকেলে সানির বড় ভাই হাসাদুজ্জামান একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামি করা হয় সানির সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া অন্য ১৫ বন্ধুকে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker