লাইফস্টাইল

স্বর্নার ওয়েট লস জার্নির গল্প পার্ট -১

লকডাউনে বাসায় এসে ইউটিউব দেখে দেখে নতুন নতুন রান্না শেখার চেষ্টা করছিলাম প্রতিদিনই কোনো না কোনো নতুন আইটেম রান্না করার চেষ্টা করেছি। লকডাউনে বাসায় এসে ইউটিউব দেখে দেখে নতুন নতুন রান্না শেখার চেষ্টা করছিলাম প্রতিদিনই কোনো না কোনো নতুন আইটেম রান্না করার চেষ্টা করেছি।

নিজের প্রথম প্রথম রান্না নিজেই সব থেকে বেশি খেতাম বলে মনে হতো। যাই হোক যেহেতু বাসাটা শহর থেকে একটু দূরে গ্রামের দিকে সেহেতু সেখানে ভাত খাওয়ার প্রবণতাটা একটু বেশিই। তাই সচরাচর ভাতটাই বেশি খাওয়া হতো আর বিকালে ভাজাপোড়া তো আছেই। যখনই আমি কোন খাবার রান্না করে ফেসবুকে ডে শেয়ার দিতাম বা আপলোড করতাম তখনই কিছু মানুষ তাদের কু মন্তব্যে আমার কমেন্ট বক্স কিংবা ইনবক্স দুটোই ভরে ফেলত।

২৬ শে আগষ্ট ২০২০ দিনটি ছিল আমার ভাইয়ের মেয়ের জন্মদিন। জন্মদিনের সমস্ত এ্যারেজমেন্ট আমি নিজেই করেছিলাম। কিন্তু বাসায় যে গেস্টগুলো এসেছিল আমাকে দেখে একটাই কথা, ওমা কি মোটা হয়ে গেছো!! মনে হচ্ছে ফেটে জাবা, এত মোটা কিভাবে সম্ভব!! সারাদিন কি খাও আর ঘুমাও? সবার কথা গুলো ঐদিন আমার খুব গায়ে লেগেছিল তাছাড়াও প্রতিনিয়ত পরিবার থেকে কিংবা যেখানে বেড়াতে যেতাম সেখান থেকে কু মন্তব্য শুনতে হতো। আমার পরিবারের মানুষজনও কিন্তু কথা শুনাইতে এর বাইরে ছিল না। ২৬ শে আগষ্ট রাতে আমি অনেক কেঁদেছিলাম এই ভেবে যে আমাকে সবাই আমার বাহ্যিক সৌন্দর্য দিয়ে বিচার করে কেউ আমার ভিতরটা দেখেনা। তাদের কথায় আমার কষ্ট হতে পারে এটা কেউ কখনো চিন্তা করে না। ওই রাতেই চিন্তা করি যে ১ লা সেপ্টেম্বর থেকে আমি আমার যে প্রতিদিনের খাবার সেখান থেকে কমিয়ে খাবো এবং ৫ থেকে ১০ কেজি কমাবো।

এটাই ছিল আমার ওয়েট loss journey তে পদার্পণের কাহিনী। হয়তো যতটা সংক্ষেপে, বা যতটা সাবলীল ভাষায় আমি বিষয়গুলো উপস্থাপন করছি আমার শুরুটা এতটা সুন্দর ও সাবলীল ছিলনা। অনেক কষ্ট পেয়েই আমি এই কঠিন জার্নিটা শুরু করেছিলাম।
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ এত ধৈর্য্য নিয়ে আমার এত বড় লেখা পড়ার জন্য এবং আবারও সবাইকে অনেক ধন্যবাদ জানাই আমার সাথে থাকার জন্য এবং আমাকে অনুপ্রেরণা যোগানোর জন্য
সেপ্টেম্বরের ১ তারিখের আগে দুই তিন দিন ইউটিউবে অনেক ওয়েট লস এর ভিডিও দেখলাম, অনেকের অনেক ডায়েট চার্ট দেখলাম, অনেক ইউটিউবারের কথা শুনলাম, অনেক মোটিভেশনাল ভিডিও দেখলাম ওয়েট লস নিয়ে।

প্রথম থেকে কেনো জানিনা ডক্টর জাহাঙ্গীর কবির স্যারের ডায়েট প্ল্যান আমার পছন্দ হতো না। ভাত ছাড়া থাকবো এটা কখনও কল্পনাও করতে পারিনি, যেখানে তিন বেলা ভাত খাই। এইজন্য প্রথম দিকে তার ভিডিও গুলোকে আমি avoid করতাম।

অবশেষে নিজেই নিজের মতো করে একটা চার্ট তৈরি করলাম। যেহেতু প্রথম ডায়েট শুরু করছি, সেহেতু নিজের রেগুলার খাবারটাকেই রাখলাম শুধুমাত্র পরিমাণ কমিয়ে দিলাম। আর কিছু এক্সট্রা খাবার যোগ করলাম, যেমন: চিয়া সিড , প্রতিদিন দুই বেলা নিয়ম করে সালাদ, গ্রিন টি।

প্রথমে চার্টটা আমি যে ভাবে সাজিয়ে ছিলাম সেটা আমি নিচে যোগ করে দিলাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে,
গরম পানি +লেবু মধু/ চিয়া সিড।
৩০মিনিট পরে,
একা / দুইটা লাল আটার রুটি + একটা ডিম পোস + এক বাটি সবজি
৩০ মিনিট পরে, এক কাপ গ্রিন টি।

দুপুর (২.৩০এর মধ্যে)
এক কাপ ভাত(soup বাটি)+সবজি+মাছ/মাংস+এক বাটি শশা

বিকাল(মাগরিব পরে)
এক কাপ গ্রিন টি

৭.৩০-৮.০০
৩০মিনিট এক টানা হাটা।

রাতের খাবার(৮.৫০ এর মধ্যে)
ওটস+ এক বাটি শশা অথবা একটা থেকে দুইটা রুটি+ সবজি + সালাদ(শশা)।

ঘুমানোর আগে এক কাপ কুসুম গরম পানি খেতাম।

আল্লাহর নাম নিয়ে শুরু করে দিলাম। সবাই বললো আমার দ্বারা হবে না, আমি পারব না, কই সাত দিন তো হয়ে গেল একটু তো কমছে না, এইভাবে কখনো ওজন কমে!! কোন কথাতে আমি পাত্তা দিতাম না, হ্যাঁ কষ্ট পেতাম কিন্তু গায়ে লাগাইতাম না। আমার মনে আছে এই ডায়েট প্ল্যানটা আমি দুই মাস ফলো করেছিলাম টানা। তারপর ডায়েট প্ল্যানে আমি কিছু চেঞ্জ এনেছিলাম। বাকিটুকু খন্ড-৩ এ বলবো । আসলে এত লেখাও আমার পক্ষে সম্ভব না একবারে। আপনাদেরও একটা ধৈর্যের ব্যাপার আছে। তাই বাকিটুকু আগামী দিন বলবো। ধৈর্য ধরে আমার লেখাগুলো পড়ার জন্য আপনাদের আবারো ধন্যবাদ। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেনো আমার বর্তমানে ওজনটাকে ধরে রাখতে পারি।
লেখক : শাম্মী আক্তার স্বর্না

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker