কোভিড-১৯স্বাস্থ্য কথা

এই ১০ রোগ শরীরে থাকলে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি

প্রতিনিয়ত বেড়ে চলা কোরোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভাবিয়ে তুলছে সবাইকেই। করোনা আক্রান্ত ব্যাক্তিদের পর্যবেক্ষন করে দেখা যায় শরীরে পূর্ব থেকেই কিছু রোগের বাস থাকলে সেইসব ব্যাক্তিদের শরীরে আরও ভয়াবহ রূপ নেয় এই ভাইরাস। এমনকি তাদের মৃত্যুর সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। কি কি সেই রোগ?

১. অ্যাস্থমা

আমরা জানি কোরোনা ভাইরাস মানুষের শ্বাসযন্ত্র বা ফুসফুসের ওপর প্রভাব বিস্তার করে যার ফলে আক্রান্ত মানুষ তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগেন। এমন অবস্থায় যেসব রোগীদের শরীরে আগেই বাসা বেঁধে আছে অ্যাস্থমা তাদের শরীরে এই সমস্যা বেশী হয়। তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও যেমন বেশী তেমনই তাদের শরীরে এই ভাইরাসের প্রভাবও বেশী পড়তে পারে।

২. ডায়াবিটিস

সমীক্ষায় দেখা গেছে যেসব রোগীদের শরীরে ডায়বেটিস থাকে তাদের শরীরে কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঘটার সম্ভাবনা যেমন বেশী তেমনই তাদের মৃত্যুর সম্ভাবনাও বেশী কারন তাদের রক্তের সুগার লেভেল বা শর্করার মাত্রা সঠিক পরিমাণে না থাকায় তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা অ্যান্টি বডি তৈরি হওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়।

৩. ওবিসিটি

Body Mass Index (BMI)‌ যাঁদের ৪০-এর বেশি, অর্থাৎ যাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি আছে তারা কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশী থাকে। শরীরের অত্যধিক ক্যালরি শরীরের সব অঙ্গের, মূলত হার্টের কার্যকারিতার ওপর প্রভাব বিস্তার করে যার ফলে ব্যাক্তির রোগের সাথে লড়াই করার ক্ষমতা হ্রাস পায়।

৪. হাইপার টেনশন

অতিরিক্ত চিন্তা করার ফলে শরীরের নার্ভ শক্তি ভীষণভাবে প্রভাবিত হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে মূলত মস্তিষ্কে এর ভয়াবহ প্রভাব পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে হৃদপিন্ড এবং ফুসফুসও প্রভাবিত হয় এবং মানুষের বুকে ব্যাথা না শ্বাসকষ্টের মতন সমস্যা হয়। কোরোনা ভাইরাসের সাথে লড়াই করার জন্য মনের জোর ভীষন ভাবে প্রয়োজন এবং এই জোর কেই ভেঙে দেয় হাইপার টেনশন যার ফলে হাইপার টেনশনের রোগীদের কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশী থাকে।

৫. অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা

রক্তাল্পতা অর্থাৎ মূলত শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ নির্দিষ্ট মাত্রার থেকে কমে যাওয়া, যার ফলে শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়ে।অনেক ক্ষেত্রে অ্যানিমিয়া তে আক্রান্ত মানুষদের শরীরে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন ইত্যাদির পরিমাণ সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকেনা তাই যাদের শরীরে এই অসুখ আছে তাদের অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

৬. ক্যান্সার

ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যাক্তিদের শারীরিক অসুস্থতা এবং ওষুধের কড়া প্রভাব, কেমো, সব মিলিয়ে তাদের শরীরের লড়াই করার ক্ষমতা এমনিই অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাই ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যাক্তিরা কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে।

৭. থ্যালাসেমিয়া

থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ব্যাক্তিদের অনেক ক্ষেত্রে শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম নষ্ট হয়ে যায়।সেইজন্য তাদের অধিক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

৮. এডস

এইচ আই ভি পজিটিভ ব্যাক্তিদের ক্ষেত্রেও উঠে আসে ইমিউনিটি তত্ত্ব। তাদের শরীরেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব থাকে ফলে কোরোনা ভাইরাস তাদের শরীরে সহজেই প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

৯. কিডনি, হার্ট ও লিভারের অসুখ

শরীরের গুরুত্বপূর্ন এই অঙ্গুগুলির অসুখে যারা ভুগছেন তাদের শরীরেও জাকিয়ে বসতে পারে কোরোনা ভাইরাস। ব্রিটেনের একটি গবেষণায় এই তথ্য সামনে উঠে এসেছে যে,যে ব্যাক্তিদের কিডনি হার্ট বা লিভারে ইতিমধ্যেই কোনো গুরুতর অসুখ আছে তাদের শরীরে কোরোনা ভাইরাস সহজে প্রবেশ করতে এবং অধিক প্রভাব বিস্তর করতে সক্ষম হয়।

১০. স্ট্রোক

যাদের ইতিমধ্যেই একবার স্ট্রোক হয়ে গেছে তাদেরও সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। ব্রিটেনের স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে একবার যাদের স্ট্রোক হয়ে গেছে তাদের শরীর দূর্বল হয়ে যায় এবং সেই সময় কোরোনা ভাইরাস সহজেই তাদের আক্রান্ত করতে এবং তাদের শরীরে প্রভাব বিস্তর করতে পারে।

Related Articles

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker