কুষ্টিয়ায় নিহত সেই কিশোরীর শরীরজুড়ে নৃশংস নির্যাতনের চিহ্ন
কুষ্টিয়ায় নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর মৃত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্রীর (১৪) ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নৃশংসভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এমনকি তার শরীর পোড়ানোও হয়েছে। গলায় রশি প্যাঁচানো ছিল।
আজ বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে লাশটির ময়নাতদন্ত করেন মেডিকেল অফিসার রুমন রহমান ও সুতপা রায়। আজ সকাল ১০টা ২৫ মিনিট থেকে ময়নাতদন্ত শুরু হয়ে শেষ হয় ১০টা ৪০ মিনিটে। তাঁরা বলছেন, কিশোরীকে ধর্ষণও করা হয়ে থাকতে পারে। কিছু বিষয় লক্ষ করা গেছে। সেটা নিয়ে আরও আলোচনা করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
গতকাল বুধবার বেলা তিনটায় কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক সড়কের মিরপুর পৌরসভার ভাঙাবটতলা এলাকায় একটি ভুট্টাখেত থেকে ওই স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাড়ি মিরপুর পৌর এলাকায়। সে স্থানীয় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
এর আগে মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে ওই স্কুলছাত্রী নিখোঁজ হয়। গতকাল সকালে মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন তার বাবা।
আজ বৃহস্পতিবার মর্গের সামনে ওই ছাত্রীর মামা বলেন, তাকে হয়তো প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করা হয়েছে। এরপর তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তার সঙ্গে কারও কোনো সম্পর্ক ছিল না। গতকাল সকালে বাড়ির দরজার সামনে থেকে হাতের একটি ব্রেসলেট পাওয়া গেছে। সেটি পুলিশ নিয়ে গেছে। তারা এ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
স্কুলছাত্রীর চাচাতো বোন বলেন, ‘সে খুবই শান্ত–ভদ্র মেয়ে ছিল। সে মুঠোফোন ব্যবহার করত না। তারা দুই ভাই–বোন। পরিবারের একমাত্র ছোট মেয়ে হওয়ায় খুব আদরের ছিল। লাশটি উদ্ধারের সময় আমি নিজে দেখেছি, তাকে কতটা নির্যাতন করা হয়েছে।’
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্কুলছাত্রীর সঙ্গে এক ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানা গেছে। বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, রাতে বেশ কিছু তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছিল। তবে কাউকে আটক করা হয়। তদন্ত এগিয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই পুরো ঘটনা উন্মোচিত হবে।