ঢাকাসারাদেশ

দেখলে মনে হবে এ যেনো দুবাই-ইউরোপ, না হয় আমেরিকা!

ঢাকা : নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অনানুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে। ঢাকার জুরাইন থেকে মাওয়া এবং শরীয়তপুরের পাচ্চর থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেয়া হয়েছে।

এটি এশিয়ান হাইওয়ের করিডোর-১ এর অংশ এবং বাংলাদেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে। দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়ের ফরিদপুর ভাঙ্গায় ক্লাসিক ক্লোভার লিফ ইন্টারসেকশন নির্মিত হয়েছে। ক্লোভার লিফে যেমন চারটি পাতা সমানভাবে চারদিকে চলে গেছে, একইভাবে ভাঙ্গা ইন্টারসেকশনে চারটি রুট চারদিকে চলে গেছে। কোথাও ফ্লাইওভারের মতো, কোথাও আবার ওভার পাসের মতো।

ফলে এখানে একদিকে যেমন কমেছে সড়ক দুর্ঘটনা। অন্যদিকে হারিয়ে গেছে যানজট। একই সঙ্গে সড়কের সৌন্দর্যও বেড়ে গেছে।

পাখির চোখে দেখলে মনে হবে, এ যেনো দুবাই বা ইউরোপ আমেরিকার কোনো রাস্তা। রাতের বেলা সড়কবাতিগুলো জ্বলে উঠলে সৃষ্টি হয় ভিন্ন এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। আধুনিক এই স্থাপত্যকর্মের পেছনে যার অবদান, তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার উদ্যোগ ও নির্দেশনাতেই দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার এমন অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটছে।

বাংলাদেশের কোনো সড়কে এধরনের প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত মোড় এই প্রথম। পদ্মাসেতু পার হয়ে ৩০ মিনিটেই পৌঁছে যাওয়া যাবে ওই মোড়ে। রাজধানী ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে পদ্মাসেতু পাড়ি দিয়ে মিলবে এমন নান্দনিক দৃশ্য।

নান্দনিক মোড়ের উত্তর দিকে ফরিদপুর জেলা সদর হয়ে দৌলতদিয়া ঘাট, পশ্চিমে খুলনা বাগেরহাট-যশোর হয়ে বেনাপোলে মিশেছে। ভাঙা মোড়ের দক্ষিণে গোপালগঞ্জ মাদারিপুর হয়ে বরিশাল ও পূর্ব দিকে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকায় পৌঁছানো যায়। এখানে চারটি আন্ডারপাস, একটি ফ্লাইওভার ও চারটি পৃথক লেন রয়েছে। এই এক্সপ্রেসওয়েতে লেন ভুল হলে ১০ কিলোমিটার বেশি গোলক ধাঁধাঁয় পড়তে হবে।

ভাঙা মোড় দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২৫টি জেলায় যাওয়া যায়। পদ্মাসেতুর পর বর্তমান ও ভবিষ্যতে যাতে করে কোনো যানজট না লাগে সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এমন নান্দনিক পরিকল্পনা।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধ, জটলা রোধ ও সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ৭৫২টি ইন্টারসেকশন নির্মাণ করবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। জানা গেছে, সারাদেশের মহাসড়কে ইন্টারসেকশন নির্মাণে ৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নকশা করা হচ্ছে। সড়কের কোথায় বেশি জটলা হয়, সেই বিষয়গুলো চিহ্নিত করেই হচ্ছে নকশা। এমন ৭৫২টি স্থান নির্বাচিত করা হয়েছে। সব ইন্টারসেকশন বিদেশি আদলে দৃষ্টিনন্দন করে নির্মাণ করা হবে।

ইন্টারসেকশন নির্মাণের পাশাপাশি আরো কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক যাত্রা স্থানে ওজন পরিমাপক সেতু স্থাপনের মাধ্যম ওভারলোড নিয়ন্ত্রণ করা। ১ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শেষ হবে ওই কাজ।

দুর্ঘটনার পরিমাণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে কমিয়ে আনতে ১২৮টি নতুন স্পটে সাইন ও মার্কিং স্থাপন করা হবে। এতে ৬৩১ কোটি টাকা ব্যয় হবে। সড়ক নিরাপত্তা কার্যক্রমে দুর্ঘটনা হ্রাস হবে বলে মনে করা হচ্ছে। জাতীয় মহাসড়কের ১২১টি এক্সিডেন্ট ব্ল্যাক স্পট চিহ্নিত করে উন্নয়ন করা হয়েছে। ফলে দুর্ঘটনাও কমেছে। একইভাবে ইন্টারসেকশন নির্মাণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা কমার পাশাপাশি জটলাও কমে আসবে।

Related Articles

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker