Spider-Man: ‘স্পাইডারম্যানের জালে’ দর্শক, নিমেষে ব্যাঙ্ক থেকে উধাও টাকা
নয়াদিল্লি: ‘স্পাইডারম্যান’-এর জালে এবার দুষ্কৃতীরা নয়, ধরা পড়ছে সাধারণ নির্দোষ মানুষ। কীরকম ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন না তো? এখন প্রতারকরা নতুন সিনেমা ‘স্পাইডার-ম্যান: নো ওয়ে হোম’-এর (Spider-Man: No Way Home) উপর ভিত্তি করে ভুয়ো লিঙ্কের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। সেই লিঙ্ক দিয়ে তাঁদের ব্যাঙ্কের সমস্ত তথ্য চুরি করে নিচ্ছে। শুক্রবার এমনটাই জানিয়ে সতর্ক করলেন সাইবার-নিরাপত্তা গবেষকরা (Cyber-security researchers)।
কাসপার্সকি (Kaspersky) নামক এক সংস্থার গবেষকদের কথায় তাঁরা ছবির প্রিমিয়ারের আগেই প্রতারকরা সক্রিয় হয়েছে। গবেষকদের দাবি দর্শকদের ব্যাঙ্কের তথ্য চুরি করার জন্য বিভিন্ন ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে এমন হদিশ পেয়েছেন তাঁরা।
নতুন এই সুপারহিরো ছবি ‘স্পাইডার-ম্যান: নো ওয়ে হোম’ প্রিমিয়ারের আগেই দেখতে পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগের টোপ দেওয়া হয় দর্শকদের। সেই লোভে অনেকেই প্রতারকদের জালে পা দিয়েছেন। ছবি মুক্তির আগে দেখার জন্য দর্শকদের একটি লিঙ্কে রেজিস্টার করে ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ দিতে বলা হয়।
এই তথ্য সম্পূর্ণ দিয়ে দিলেই কেল্লাফতে প্রতারকদের। সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের কার্ড থেকে গুচ্ছ গুচ্ছ টাকা ও পেমেন্ট বিবরণ সংগ্রহ করে নেয় প্রতারকের দল এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই ছবি আগে দেখার কোনও সুযোগ দেওয়া হয় না।
সাইবার-নিরাপত্তা গবেষকদের কথায়, ‘স্পাইডার-ম্যান সিরিজের নতুন ছবি মুক্তি নিয়ে অনুরাগীদের মধ্যে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে সেটা কাজে লাগিয়েই সক্রিয় হয়েছে এই জালিয়াতদের দল। ‘নো ওয়ে হোম’-এর প্রিমিয়ার দেখানো নিজেদের জাস ছড়ানোর জন্য লোভ দেখানো ছাড়া আর কিছুই নয়।’
সুপারহিরো ছবি সবসময় অনুরাগীদের মনোযোগ আকর্ষণ করে, তাই সেই সমস্ত ছবির ট্রেলারগুলি বিশেষভাবে যাচাই করা হয়। এই সমস্ত ছবি মুক্তির আগে একাধিক গুজব রটে, ছবির গল্প, অভিনেতা ইত্যাদি নিয়ে। ‘ইন্টারনেটে “নো ওয়ে হোম” নিয়ে প্রচুর জল্পনা-কল্পনা ও গুজব রটেছে। যেমন, আকছার এমন খবর হতে দেখা গেছে যে টোবি ম্যাগুয়ার ও অ্যান্ড্রিউ গারফিল্ড (Tobey Maguire and Andrew Garfield) দু’জনেই স্পাইডার-ম্যান হিসেবে ফিরবেন এই ছবিতে,’ বলছেন এক গবেষক। যদিও তাঁদের এই ছবিতে আসার বা অভিনয় করার কোনও অফিশিয়াল বা সঠিক তথ্য নেই। তবুও অনুরাগীরা নিজেদের মতো ভাবতে শুরু করে দেন, থিওরি বানিয়ে ফেলেন। ফলে তাঁদের মধ্যে তাড়াতাড়ি ছবি দেখে ফেলার একটা খিদে তৈরি হয়। তাঁদের এই দুর্বলতারই সুযোগ নেয় প্রতারকরা।
অনুরাগীদের মধ্য়ে আগ্রহ বাড়ানোর জন্য, প্রতারকরা এই সমস্ত ভুয়ো ওয়েবসাইট বা পেজে সিনেমার আসল অফিসিয়াল পোস্টার ব্যবহার করে না। বরং সমস্ত “স্পাইডার-ম্যান” অভিনেতাদের ছবি নিয়ে একসঙ্গে একটি ফ্যান আর্ট তৈরি করে ব্যবহার করে। এই ধরনের পোস্টারের মাধ্যমে অনুরাগীদের চোখে ধুলো দিয়ে তাদের আকর্ষণের চেষ্টা করে জালিয়াতরা,’ বলা হয় ওই রিপোর্টে। গবেষণা করে দেখা গেছে, এই সমস্ত সাইট ডাউনলোড করলে বা লিঙ্কে ক্লিক করলে একইসঙ্গে দর্শকদের ডিভাইসে আরও একাধিক প্রোগ্রাম বা সফ্টওয়্যার ডাউনলোড হয়ে যায় যা সঙ্গে সঙ্গে সেই ডিভাইসকে নিজের তত্ত্বাবধানে নিয়ে নিতে পারে।
কাসপার্সকির এক সিকিউরিটি এক্সপার্টের কথায়, ‘আমরা গ্রাহকদের সবসময় সতর্ক করি যাতে তাঁরা যেন কোনও পেজে ঢোকার আগে সচেতন থাকেন এবং কোনও “আনভেরিফায়েড” সাইট থেকে ফাইল ডাউনলোড না করেন।’ একইসঙ্গে তিনি জানান, কোনও ছবি বা টিভি সিরিজ বা ওয়েব সিরিজের মুক্তির আগে সেগুলো দেখিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় যেসব সাইট বা লিঙ্ক, সেগুলি থেকে সতর্ক থাকা উচিত।