অপরাধকুষ্টিয়া বার্তা

কুষ্টিয়ায় প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে বালি ফেলে গৃহবন্দী রাখার অভিযোগ  

নিজস্ব প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে বালু ফেলে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে আরেক পক্ষ।এতে করে টানা ২০ দিন ধরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে অসহায় পরিবারটি। বিষয়টিকে এলকাবাসী অমানবিক বললেও চলাচলের রাস্তায় বালি দেওয়ায় জড়িতরা বলছে নিজ জমিতে কি করবেন সেটি তাদের বিষয়। এদিকে জনপ্রতিনিধিরা দিচ্ছেন দায় সারা জবাব। আর ভুক্তভোগীর অভিযোগ আদালতে প্রক্রিয়াধীন মামলা তুলে নিতে প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়ে তার ওপর জোর জবরদস্তি করছে প্রতিপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার বটতৈল মোড় এলাকায় ।

ঘটনা সূত্রে জানাযায়, বটতৈল এলাকার খায়রুল ইসলাম সােহেল ওরফে বকুলের সাথে একই এলাকার মৃত দানেজ মন্ডলের ছেলে মফিজ উদ্দিনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বটতৈল মৌজার আর. এস ৯০৬ নং খতিয়ানভূক্ত ১১৬,১১৭ দাগের পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিরােধ চলে আসছিল। এ বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে। মামলা নং দেং-২৫২/২০।আদালতে চলমান এই মামলা নিষ্পত্তি না হতেই গত ২৭ ডিসেম্বর (সােমবার) দুপুরে অভিযুক্ত মফিজ উদ্দিন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী চার ট্রাক বালি এনে ভুক্তভোগীর চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এ অবস্থায় পরিবারটি একপ্রকার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে । ভূক্তভোগী বকুল জানান, অতীতেও মফিজ উদ্দিন, বিল্লাল হােসেন ও মজিবর রহমান মিলে জোর পূর্বক আমাকে আমার পৈতৃক ভিটা থেকে উচ্ছেদ করার অপচেষ্টা চালিয়েছিলো । আমি এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় গত ১৮ অক্টোবর অভিযােগ দায়ের করি। সবশেষ আমার চলাচলের রাস্তায় সদলবলে চার ট্রাক বালু ফেলে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের গৃহবন্দি করে রেখেছেন । আমি ঘটনার সময় ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে পুলিশের সাহায্য চেয়েছিলাম । কিন্তু কোন সাহায্য পাইনি।বর্তমানে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। প্রতিকার চেয়ে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছি। ঘটনার ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও কি থানা পুলিশ আর কি বা জনপ্রতিনিধি কেউই আমাদের সহযোগীতা করতে এগিয়ে আসেনি।বাধ্য হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় আজ আরো একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।আশা করছি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ চলার পথটি অবমুক্ত করে আমাদের সাভাবিক জীবন যাপনে সহযোগিতা করবেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ভুক্তভোগীর চলাচলের রাস্তাসহ বসতঘরের জনালাঅব্দী বালির বিশাল একস্তুপ ফেলে রেখেছে প্রভাবশালী ঐ মহলটি। সাংবাদিকদের আসার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে একদল সন্ত্রাসীসহ হাজির হন মূল অভিযুক্ত মফিজ উদ্দিন। এসময় তারা সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।পরে স্থানীয়রা বাধা দিলে তারা নিবৃত্ত হন।এব্যাপারে জানতে চাইলে মফিজ বলেন, ‘বকুলের সাথে জমিজমা নিয়ে ঝামেলা আছে। তাই তাকে ‘সাইজ’ করার জন্য আমার জায়গায় আমি বালি রেখেছি। আমার জায়গায় আমি কী করবো সেটা আমার ব্যাপার।’

স্থানীয়রা জানান,একসময় বটতৈল মোড়ে ছোট্ট একটা ফলের দোকান চালাতেন মফিজ। হঠাৎকরেই তিনি যেন আালাদ্বীনের চেরাগ হাতে পেয়ে ফুলেফেঁপে উঠেছেন।ক্ষমতার দাপটে নিজের আত্মীয় স্বজনদেরকেও ছাড় দিচ্ছেন না তিনি। বসতবাড়ির রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া অন্যায়, অমানবিক। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। এব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলেও মত দেন তারা ।

একই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বটতৈল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান। তিনি বলেন, বসতবাড়ির রাস্তা বন্ধ করায় পরিবারটি অসহায় অবস্থায় আছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। সত্যিই অমানবিক।

এবিষয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভার ২০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এজাজুল হাকিম বলেন , ঘটনাটি জানার পর দুই পক্ষকে মিমাংসার জন্য ডাকা হয়েছিল ।এমনকি আমি নিজে স্ব-শরীরে গিয়ে দেখে এসেছি। বিষয়টা অমানবিক। মফিজ কাউকেই তোয়াক্কা করছে না।

এদিকে কু্ষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাধন কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

এবিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)সাব্বিরুল আলম বলেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker