অপরাধ

মালিহাদের ভয়ংকর ত্রাস চতুর বাহিনী! পর্ব-১

নিজস্ব প্রতিবেদক :কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়নে আবারো সন্ত্রাসীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে গেলেও ধরা ছোয়ার বাইরে রয়ে গেছে তারা। সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। কেউ আবার অভিযোগ দিলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে অভিযোগ উঠিয়ে নিচ্ছেন। জানাযায়, প্রায় দুই যুগ আগে ধারাবাহিক নানা অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এলাকায় মূর্তিমান আতংক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল উপজেলার মালিহাদ ইউনয়নের আশান নগর এলাকার কুখ্যাত চতুর বাহিনীর ।যার নেতৃত্বে রয়েছে মালিহাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি আকরাম ওরফে আকরাম চতুর। ২০১৭ সালে বড়া বোয়ালিয়ায় রনি ও হাফিজ নামের দুই কিশোরকে তুচ্ছ ঘটনায় নৃশংসভাবে হত্যা কান্ডের মধ্য দিয়ে বেশ আলোচনায় উঠে এসেছিল তার নাম।খুন, ধর্ষন,চাঁদাবাজী,জবরদখল ও মাদক ব্যাবসাসহ কি অভিযোগ নেই তার বিরুদ্ধে। মিরপুরসহ বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ অন্তত ডজন খানেক মামলা রয়েছে তার। তবুও অনেকটা বীরদর্পে গোটা ইউনিয়ন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তিনি ও তার বাহিনীর লোকেরা।। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়া আর নিষিদ্ধ সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততার দরুন দিনকে দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আকরাম । গোটা এলাকায় যেন আকরাম এক মূর্তিমান আতংকের নাম। ভয়ে এর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। অনুসন্ধানে জানাযায়,মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়নের আশান নগর এলাকার নসীব উদ্দীনের ছেলে আকরাম গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ঐ এলাকায় অবাধে নানা অপকর্মের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে । স্থানীয় চিন্হিত সন্ত্রাসী আর বেশ কয়েকজন উঠতী ও দাগী সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে বাহীনি গড়ে তুলেছে তিনি। জানাযায়,একসময় আন্ডারগ্রাউন্ডের সক্রিয় সদস্য ছিল এই আকরাম। এরপর গা বাঁচাতে ১৯৯৬ সালে যোগদেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে।যদিও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এ সভাপতির আপন চাচা হাবিবুর রহমান ছিলেন ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ইউনিয়ন পিস কমিটির সভাপতি। জানা যায়,২০০৩ অত্যান্ত সুকৌশলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়ন শাখার সভাপতির পদটি বাগিয়ে নেওয়ার পরপরই ভাগ্য বদলাতে শুরু করে আকরামের।ক্ষমতার জোরে আশান নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদটিতেও রয়েছেন ১২ বছর ধরে । অভিযোগ রয়েছে বিদ্যালয়টির বর্তমান প্রধান শিক্ষক ছাড়াও অন্তত ছয়টি নিয়োগে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। তাছাড়া স্থানীয় মাদক ব্যাবসায় অর্থ লগ্নি,নিয়মিত চাদাবাজী আর জবর দখল সহ নানা অপরাধের মধ্যদিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে,আকরাম ও তার বাহিনীর সদস্যদের হাতে নির্জাতনের স্বীকার হয়নি এমন লোকের সংখ্যা ঐ এলাকায় নেহায়েত কম। স্থানীয় শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, ব্যাবসায়ী এমনকি সাধারণ মানুষ এই বাহিনীর অত্যাচারে রীতিমতো অতিষ্ঠ। এই বাহিনীর হাতে অতি সম্প্রতি যারা নির্জাতনের স্বীকার হয়েছে : গত ৫ জানুয়ারী আশান নগর এলাকার সাবেক ফুডবলার খোকন(৪৮) এই বাহিনীর তিন সদস্যের দ্বারা বেধরক মারধরের স্বীকার হন। নিজের কিশোরী কন্যাকে ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় এ হামলার স্বীকার হন তিনি।বর্তমানে এ ফুডবলার আলমডাঙ্গার হারদী হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। এঘটনার ঠিক দু’দিন পর আশান নগর মৎস ভবনের সামনে স্থানীয় আনোয়ার,সানোয়ার,শাহিন,দিপু ও বল্টু নামের পাঁচ যুবককে প্রতিপক্ষের লোক সন্দেহে বেধরক মারধর করে আকরাম বাহিনী। এঘটনায় বাহিনী প্রধান আকরামকে আসামি করে মিরপুর থানায় একটি মামলা করা হয়।জানা যায়,প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ এই বাহিনীর হাতে ব্যাপক নির্জাতনে স্বীকার হয়েছে। যাদের অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে চাননা অনেকে আবার আইনের আশ্রয় নিয়েও আছেন বিপাকে। অভিযোগ রয়েছে, সরকারী খাসজমিতে বসবাসকারী গরীব নিরীহ লোকদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ, ব্যাবসায়ীদের টাকা আত্মসাৎ ও বেপরোয়া চাঁদাবাজি , স্কুল -মাদ্রাসায় নির্মাণাধীন ভবনের মালামাল সরিয়ে চাঁদা আদায়, সাধারন মানুষের জমি জমা সংক্রান্ত জটিলতায় অর্থ আদায় সহ এহেন কোন অপকর্ম নেই যার সাথে জড়িত নেই এই বাহিনীটি ।(চলবে….)

Related Articles

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker